Poetry in Bengali
|
জ্যোতির্ময় দত্ত জীবনানন্দের অনুসরণে১. আমরা হেঁটেছি যারা কপিলের আশ্রম ছাড়িয়ে যেখানে হাজার বছর ধরে পৌষের কয়েকটি দিন গঙ্গাসাগর মোহনায় জেগে ওঠে হোগলার অচির নগর আমরা হেঁটেছি যারা হোমগার্ড-দমকল-আমলার সার-সার জীপ, ঘাটে বাঁধা লঞ্চ, পিছু ফেলে— দেখেছি সংক্রান্তির কুয়াশার শাদার ভিতরে শাদা মিশে যেতে গাঙচিল, বক— আমরা শুনেছি যারা দূর জেলিঙহ্যাম খাতে জানুয়ারির ফগে ঢাকা দুয়েকটি বিরল কনটেইনার জাহাজের গুরু-গুরু— আমরা দেখেছি যারা বিমূঢ় বিস্ময়ে কুয়াশার মশারি সরিয়ে বেরিয়ে আসতে ইংরেজের নির্মিত বাতিঘর— হয়তো আসিবে বল্লাল ফিরে একদিন এই মোহনায় হয়তো ক্লাইভ নয় আর, হয়তো তাইওয়ান কি নাইজেরিয়ার দুঃসাহসী উৎসাহিত কেউ দুয়েকশ’ বছর হয়তো সাগর হবে নতুন হঙকঙ, টায়ার, বেবিলন। ২. আমরা যারা সাগরদ্বীপ কি ধানসিড়ি নদীতীর ছেড়ে হেঁটেছি অনেক দূর মাঝে মাঝে, তিতকুটে কফির গন্ধে কি বিয়ারের ফেনায়, দেখতে পাই খেজুরের তারাবাজির মতো ছড়ানো ডাল, দা হাতে শিউলি উঠছে কুমিরের ঘাড়ের চেয়েও বর্মময় গাছে, ছড়া-ছড়া বর্শাফলকতীক্ষè পাতার সুরক্ষিত ভাঁড়ে জমছে রস, যে-সংবাদে পয়লা নম্বরের সমস্ত মাছি না-হোক উত্তেজিত এবং যে ধরনের রোমশ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বিবর্জিত জীবন ডুসেলডর্ফে ধ'রে নিয়েই কান পেতেছিলাম বোর্ডিঙের ঘোষণার জন্য— চতুর্দিকে ব্যস্ততা ও সিকিউরিটি জনিত অপমানে অভ্যস্ত তো হয়েই আছি— হঠাৎ কাচের ওপারে বাইরে কার্নিশে মখমল কালো ল্যাজ ও গর্জন তেল-চকচকে আবলুশ ঠোঁট নিয়ে দেখা দিলেন জীবনানন্দের সেই দাঁড়কাক বরিশালে অনেক খুঁজেও কবি হারিয়ে ফেলেছিলেন যাকে পাড়াগাঁর পথে পথে সত্য আর দেখা যায় না এমন স্বাস্থ্য আর অহংকারে ফেটে পড়া কাক সে আমাকে ঘাড় কাত ক'রে দেখছিল যেন চিরচেনা চাল ধোয়া স্নিগ্ধ হাত ভালো, কিন্তু তার ও আমাদের স্বভাব হচ্ছে ওড়া। |