|
Contributors:
Poetry and Essays:
Thomas Tranströmer
Seamus Heaney
Shaheed Quaderi
Stanislao G. Pugliese
Sambhu Rakshit
Roni Adhikari
Robiul Manik
Robidas Subash
Rassel Ahmed
Rahul Roychowdhury
Rahman Henry
Nino Provenzano
Naznin Seamon
Lidia Chiarelli
Krishnendu Kumar Das
Jyotirmoy Datta
Joan Digby
Hassanal Abdullah
Gaetano Cipolla
Dhanonjoy Saha
Colin Dodds
Bishnupada Ray
Binoy Barmon
B. Amore
Animesh Chandan
Letters to the Editor:
Zakeria Sirazi
Stanley H. Barkan
Belal Beg
Shameem Chawdhury
Sumit Ranjan Das
Rudra Kinshuk
Robiul Manik
Preety Sengupta
Mahbubul Alam Akhand
Khan Hasnain Aaqib
Cover Art:
Helen Bar-Lev
|
|
নিউইয়র্কে হয়ে গেলো তিনদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব
প্রথম দিন
শব্দগুচ্ছ কবিতা পত্রিকার ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার ২৩শে আগষ্ট, ২০১৩ শুরু হয় নিউইয়র্কে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব। ম্যানহাটনের ব্যাটারি পার্কে অবস্থিত পোয়েটস হাউসে এই কবিতা উৎসবের প্রথম দিনে বাংলা, ইংরেজী, ইটালিয়ান, পোলিশ, টার্কি, রাশিয়ান, স্প্যানিশ সহ ১২টি ভাষার কবি, সাহিত্যিক কবিতা পড়েন। অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন হাসানআল আবদুল্লাহ, জ্যোতির্ময় দত্ত, মীনাক্ষী দত্ত, ফারুক আজম, আনিস আহমেদ, স্ট্যানলি এইচ বারকান, মারিয়া বেনেট, সুলতান ক্যাটো, ক্রিস্টিন ডোল, মাইক গ্রেভ, রবিন মেটস, ইভেত নেসার মোরেনো, মিকেলা মোসোলিনো, নাজনীন সীমন, বিল ওয়ালেক, প্রীতি সেনগুপ্তা, মিয়া বারকান ক্লার্ক প্রমুখ কবি সাংবাদিক ও শিল্পীবৃন্দ। অত্যন্ত সুন্দর ও প্রাণবন্ত উপস্থাপনা সকলের মন কাড়ে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পোয়েটস হাউসে অবস্থিত ৫০ হাজার কবিতার বইয়ের ও এই স্থাপনার নানা দিক তুলে ধরতে বিশেষ ট্যুরের আয়োজন করা হয়। গাইড হিসেবি অংশ নেন প্রোগ্রাম এসিসিটেন্ট জো ফ্লেস।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহাম্মদউল্লাহ বাংলা কবিতার ঐতিহ্য ও শব্দগুচ্ছ’র মাধ্যমে অনুবাদ প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। জ্যোতির্ময় দত্ত শব্দগুচ্ছ ও এর সম্পাদক হাসানআল আব্দুল্লাহর অগ্রযাত্রাকে স্বাগত জানান। এবং এই প্রকাশনা অব্যহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অনুষ্ঠানে সহোযোগিতা করার আশ্বাস দেয়া হয় পোয়েস্ট হাউজের পক্ষ থেকে।
দ্বিতীয় দিন
২৩শে আগষ্ট, শনিবার, ২য় দিনের আয়োজন আরো জাকজমকের সাথে অনুষ্ঠিত হয় জ্যামাইকার মেরিক বুলোভার্ডে অবস্থিত কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে। এদিন ছিলো রকমারি পরিবেশনা। অনুষ্ঠান চলে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত। কবিকণ্ঠে কবিতা, আবৃত্তি, শিশুদের চিত্রাঙ্গণ প্রতিযোগিতা, বাংলা কবিতা ও তার অনুবাদের উপর বিশেষ সেমিনার, নৃত্য পরিবেশন, সঙ্গীত ও বিশেষ পুরস্কার প্রদানের ভেতর দিয়ে সাজানো ছিলো পুরো দিন। শব্দগুচ্ছ’র নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহাম্মদউল্লাহ, শব্দগুচ্ছ কবিতা পত্রিকার সম্পাদক কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ এবং কবি ও প্রকাশক স্ট্যানলি এইচ বারকান। কুইন্স লাইব্রেরীর পক্ষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিসেস ডরিস জোনস ও মিস সেলিনা শারমিন। উদ্বোধনী সঙ্গীতের পরপরই মূল মঞ্চে উপস্থিত কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক শিল্পীদের এক সঙ্গে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের ভেতর দিয়ে শুরু হয় এ দিনের অনুষ্ঠানমালা।
বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। অংশ গ্রহণ করে সমনিতা মুখার্জি, পিয়ান মুখার্জি, অনিন্দিতা ভট্টাচার্য, উর্মী দেবী, উত্তম নাগ, বিজয়া নাগ, প্রতীক বিশ্বাস, জারাফ রহমান, সামান্থা রহমান প্রমুখ। বিচারক হিসেবে ছিলেন শব্দগুচ্ছ কবিতা পত্রিকার সহকারী সম্পাদক কবি নাজনীন সীমন, মনিরা নূর, ও ক্রিস্টিন ডোল।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী দম্পতি শহীদুল সরকার ও সাকিনা ডেনী এবং মূল ধারার শিল্পী লী হ্যারিসন। যন্ত্রসংগীতের সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন নন্দিতা দাস। কবিতা পাঠ করেন মারিয়া বেনেথ, আনিস আহমেদ, সুলতান ক্যাটো, ইভেত নেসার মোরেনো প্রমুখ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে ছিলো সেমিনার। বাংলাদেশের অতীত এবং সমসময়িক কবিদের কবিতা ও এর ইংরেজী অনুবাদ নিয়ে বিশেষ সেমিনারে অংশ নেন সৈয়দ মুহাম্মদউল্লাহ, হাসানআল আব্দুল্লাহ, স্ট্যানলি এইচ বারকান, প্রফেসর নিকোলাস বার্ন্স ও আনিস আহমেদ। উপস্থিত দর্শকদের প্রশ্নেরও উত্তর দেন সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বক্তারা।
কবিতা ও বিজ্ঞান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন ড. মিজান রহমান। তিন দিনের এই কবিতা উৎসব উৎসর্গ করা হয় বাংলা ভাষার চার প্রধান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমান ও হুমায়ুন আজাদকে; এঁদের কবিতা আবৃত্তি করেন ফারুক ফয়সল এবং গোপন সাহা। এর পরপরই নিউইয়র্ক শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা বাংলাদেশের গান বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় পরিবেশন করেন। জীবন চৌধুরীর পরিকল্পনায় ও ইংরেজী অনুবাদে গান পরিবেশন করেন মনিকা রায়, চন্দ্রা রায়, বাবলী হক ও নাসরীন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে ছিলো আবারোও কবিতা পাঠের আয়োজন। এই পর্বে বাংলায় কবিতা পাঠ করেন আনিসুর রহমান অপু। মূল ভাষা ও ইংরেজী অনুবাদে কবিতা পড়েন নাজনীন সীমন, মোহাম্মাদ আতাউর রহমান, বিল ওয়ালেক, আর্থার ডবরিন, ধনঞ্জয় সাহা, ক্রিস্টিন ডোল ও স্ট্যানলি এইচ বারকান। অন্যদিকে মিকেলা মোসোলিনোর সিসিলিয়ান ভাষার গান ও মৌগন্ধা মুখার্জির রবীন্দ্র সঙ্গীত অনুষ্ঠানে যোগ করে বাড়তি স্বাদ। সব শেষে ছিলো পুরস্কার বিতরণী ও “শব্দগুচ্ছ” কবিতা পত্রিকার ১৫ বছর পূর্তির আয়োজক কমিটির পরিচিতি। শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিচারকদের রায়ে ১ম স্থান লাভ করে বিজয়া বিশ্বাস, ২য় স্থান লাভ করে পিয়ান মুখার্জি, অনিন্দিতা ভট্টাচার্য ও সামান্থা রহমান দুইজন যুগ্মভাবে ৩স্থান লাভ করে। তাছাড়া শব্দগুচ্ছ আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান কবি স্ট্যানলি এইচ বারকান। কবির হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন উপস্থিত বাংলাসহ অন্যান্য ভাষার কবি শিল্পী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
দ্বিতীয় দিনের এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে পুরোবেলাই ছিল দর্শক শ্রোতাদের আনাগোনা। সবাইকে দুপুরের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন ভূঁইয়া আহসান হাবীব। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে এই আয়োজনে ইতিপূর্বে প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহাম্মদউল্লাহকে সভাপতি করে ১৫ সদস্যের উৎসব কমিটি গঠন করা হয়। কবিতা উৎসবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শব্দগুচ্ছ কবিতা পত্রিকার সম্পাদক কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ, উপদেষ্টা স্ট্যানলি এইচ বারকান, জ্যোতির্ময় দত্ত, মীনাক্ষী দত্ত, ফারুক আজম, কৌশীক আহমেদ, মোহাম্মাদ আতাউর রহমান, বিভিন্ন উপকমিটির দায়িত্বে ছিলেন নাজনীন সীমন, আনিসুর রহমান অপু, ফারুক ফয়সাল, ভূঁইয়া আহসান হাবিব ও তৈয়বুর রহমান টনি প্রমুখ।
তৃতীয় দিন
বার্বাকিউ পার্টি, কবিতা পাঠ, ও কবিদের অন্তরঙ্গ আলাপচারিতার ভেতর দিয়ে সাজানো হয় উৎসবের তৃতীয় বা শেষ দিন লং আইল্যান্ডের ম্যারিকে অবস্থিত পাবলিশিং হাউস ক্রসকারচালর কমিউনিকেশনস-এর অফিসে। রৌদ্রময় শান্ত দিনে অপূর্ব বাতাসে খোলা আকাশের নিচে পার্শ্ববর্তী গাছে যখন শোভা পাচ্ছিলো কবিতা উৎসবের ব্যানার, কবিরা তখন ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন কবিতা, অনুবাদ, কবিতার প্রকাশ, শিল্পকলা ইত্যাদি নিয়ে নান্দনিক আলোচনায়। ৫৩টি ভাষায় সাড়ে চারশ’র উপরে দ্বিভাষিক কবিতার বই-এর প্রকাশনা অফিস এদিন উন্মুক্ত ছিলো নানা দেশের কবিদের জন্যে। ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্সিনিয়া, ম্যাসাচুসেস্ট, শিকাগো, নর্থ ক্যারোলিনা, নিউর্জাসি, পেনসিলভেনীয়া এমনকি কানাডা থেকে বিভিন্ন ভাষার কবিরা অন্যান্য দিনের মতো এদিনও জড়ো হয়েছিলেন শব্দগুচ্ছ’র পতাকা তলে। সম্মিলিত কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন কবিতার বিশ্বায়নের পক্ষে। স্ট্যানলি এইচ বারকান ও বিবি বারকানের তত্ত্ববধানে নানারকম মুখোরচক খাবার ছিলো বাড়তি পাওনা। এডাল গোর্গির কবিতার সাথে পেইন্টিং যুগিয়েছিলো নতুন উদ্যম। দুপুর একটা থেকে বিকাল ছয়টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে কবিতা পাঠ ও আলোচনায় অংশ নেন আনিস আহমেদ, লুইসা কালিও, সুলতান ক্যাটো, মেরি গোর্গি, চালর্স ফিসম্যান, লী হ্যারিসন, জোয়ান ডিকবে, রবিন মেটস, লিস মেটস, মিকেলা মোসোলিনো, মিন্ডি রিকউইজ, ধনঞ্জয় সাহা, নাজনীন সীমন, একক সৌবীর, ফ্রান সিসকো, মারসা সোলোমন, বিল ওয়ালেক প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্যে হাসানআল আব্দুল্লাহ বলেন, “কবিতার বিশ্বায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আসুন শব্দগুচ্ছ’র পৃষ্ঠাগুলোকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলি। আরো বেগবান করে তুলি আমাদের কলম।” স্ট্যানলি এইচ বারকান কবিতা দিয়ে বিশ্বজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনদিনের এই উৎসবকে সফল করে তোলার জন্য শব্দগুচ্ছকে অভিনন্দন জানান।
উৎসবের আয়োজন কল্পে প্রকাশিত হয় বিশেষ স্যুভিনির ও শব্দগুচ্ছ’র নতুন সংখ্যা। ১৫ বছরের কর্মকাণ্ডের উপর প্রবন্ধ লেখেন জ্যোতির্ময় দত্ত, স্যানলি এইচ বারকান, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, নাজনীন সীমন, ক্যারোলিন গিল ও হাসান সাব্বির। শুভেচ্ছাবার্তা পাঠন নানা ভাষার কবিরা। তাছাড়া বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয় নিউইয়র্কের সাপ্তাহিত বাঙালী পত্রিকায়। ভিডিও চিত্র নির্মাণ করেন অনলাইন একটিভিস্ট জাহেদ আহমেদ। শব্দগুচ্ছ’র পক্ষে কুইন্স লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ, পোয়েটস হাউস, ক্রস-কালচারাল কমিউনিকেসন্স, সাপ্তাহিক বাঙালী, এটিএনবাংলা টিভি, ডট-নেট, আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব কমিটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজনের সহযোগিতা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ।
নতুন ধারার সনেট প্রবর্তনের জন্যে কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ পুরস্কৃত
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ নতুন ধারার সনেট প্রবর্তনের জন্যে লেবুভাই ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০১৩ পেলেন। গত রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, স্থানীয় বঙ্কস বাংলা স্কুলের প্রিন্সিপাল জনাব হারুন-উর রশীদ এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবির হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ আতাউর রহমান, কিংবদন্তী শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শিল্পী শহীদ হাসানকেও পুরস্কৃত করা হয়। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মুহম্মাদউল্লাহ ও বিবিসির সাংবাদিক শামীম চৌধুরী কবিকে স্বাগত জানান। উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে হাসানআল আব্দুল্লাহ নতুন ধারার সনেট প্রবর্তন করেন। সনেটের প্রচলিত দু’টি ধারা পেট্রার্কান ও শেক্সপীয়রিয়ান থেকে তাঁর প্রবর্তিত সনেট অন্ত্যমিল, স্তবক বিন্যাস তথা আঙ্গিকের দিক দিয়ে আলাদা। ১৯৯৮ সালে ঢাকার বিশাকা প্রকাশনী থেকে একশটি সনেট নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘স্বতন্ত্র সনেট’ গ্রন্থ। ২০০৪ সালে ১৩০টি সনেট নিয়ে বর্ধিত কলেবরে বের হয় এই গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ। এই ধারায় কবির লিখিত সনেট সংখ্যা দু’শ ছাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ব্রিটিশ কবি, ক্যারোলিন গিল, ও বাংলাদেশের তরুণ কবিরা এই নতুন ধারায় সনেট লিখছেন। ইংরেজীতেও অনূদিত হয়েছে বেশ কিছু সনেট।
অনুষ্ঠানে কবি তাঁর সনেট থেকে আবৃত্তি করে শোনান। রথীন্দ্রনাথ রায়ের মনমুগ্ধকর সঙ্গীত ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অংশ গ্রহণে আবৃত্তি গান ও কৌতুক পরিবেশন হলভর্তি দর্শকদের আনন্দ দেয়।
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণ সভা
২৯ জুন, শনিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস পুড কোর্ট রেস্টুরেন্টে আন্তর্জাতি দ্বিভাষিক কবিতা পত্রিকা শব্দগুচ্ছ’র আয়োজনে সদ্য প্রয়াত কবি ও শিক্ষাবিদ খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণে এক বিশেষ কবিতা পাঠ ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট গল্পকার জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের সভাপতিত্ত্বে এবং কবি ও শব্দগুচ্ছ সম্মাদক হাসানআল আব্দুল্লাহ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন কবি ও প্রকাশক স্ট্যানলি এইচ বারকান ও তাঁর আর্টিস্ট স্ত্রী বিবি বারকান। স্ট্যানলি বলেন, “প্রায় দশ বছর আগে শব্দগুচ্ছ আয়োজিতে অন্য একটি কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে খোন্দকার আশরাফের সাথে আমার দেখা হয়েছিলো।” তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে তিনি তাঁর বন্ধু ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ইংরেজীতে অনূদিত খোন্দকার আশরাফের “সিলেকটেড পোয়েমস” থেকে দু’টি কবিতা আবৃত্তি করে খোন্দকারের নিজকৃত অনুবাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ‘ঢাকা-কুইন্স’ নামে নিউইয়র্কের বাঙালীদের নিয়ে তাঁর নিজের লেখা একটি কবিতাও তিনি পড়ে শোনান। গল্পকার পূরবী বসু জীবদ্দশায় কবি-শিল্পীদের মূল্যায়ন উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কবি ও গল্পকার নাজনীন সীমন নিউইয়র্কে খোন্দকার আশরাফ হোসেনের অবস্থানের সময়কে স্মরণ করে তাঁর আর্টিস্টিক রসিকতার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ইংরেজীতে তাঁর কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, “তবে খোন্দকার আশারফ হোসেনের কবিতা থেকে প্রবন্ধই আমাকে বেশী টানে।” তাঁর নিষ্ঠা ও পঠন-পাঠনের ছাপ তাঁর প্রবন্ধকে সমৃদ্ধ করেছে বলে তিনি মত দেন। সভাপতির বক্তব্যে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত বলেন, “যদিও তিনি ব্যাপক ভাবে বাঙালী পাঠক মহলে পরিচিত নন, তথাপি একটু ভিন্ন ধরনের লেখালেখির জন্যেই তিনি হয়তো নিজের জায়গা করে বাংলা কবিতায় টিকে থাকবেন।” কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ বলেন, “খোন্দকার আশরাফ হোসেন যদিও নিজেকে আশির দশকের কবি হিসেবে দাবী করেছেন কিম্বা যদিও তিনি আশির কবি হিসেবে পরিচিত, কিন্তু তার কবিতার পাঠ ও বিন্যাস পুরোপুরি ষাট দশরের মননকে ধারন করে। তিনি আশির নন, আমার ধারণা তিনি ষাটের গুরুত্বপূর্ণ কবিদের পাশাপাশি অবস্থান করেন।” ‘একবিংশ’ সম্পাদনায় তরুণদের অগ্রাধিকার দেয়া, তাঁর অনুবাদ কর্ম ইত্যাদির পাশাপাশি হাসানআল আব্দুল্লাহ সদ্য প্রয়াত এই কবির সাথে বিভিন্ন সময়ে আড্ডা ও আলাপচারিতার কথা তুলে ধরে বলেন, “তার মুত্যু আমাকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে।” অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে কবিতাপাঠ ও আলোচনায় অংশ নেন সৈয়দ মুহাম্মাদউল্লাহ, শামস আল মমীন, সব্যসাচি দস্তিদার, সালেম সুলেরী, আনিসুর রহমান অপু, সৈয়দ জুয়েদ ও একক সৌবীর। আপ্যায়ন পর্বের দায়িত্বে ছিলেন ‘আধুনিক’ সম্পাদক ভূইয়া আহসান হাবীব।
একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ'র পাঁচখানা বই
অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ'র পাঁচখানা গ্রন্থ। তাঁর 'নির্বাচিত কবিতা'র দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করছে অনন্যা প্রকাশনী এবং বহুল আলোচিত গ্রন্থ 'স্বতন্ত্র সনেট'-এর তৃতীয় ও বর্ধিত সংস্করণ প্রকাশ করছে ধ্র“বপদ। এই সংস্করণে ৭৩টি নতুন সনেট সহ, মোট সনেট থাকছে ২০৩টি। প্রকাশিত হচ্ছে কবির লেখা দ্বিতীয় উপন্যাস 'ডহর'। উল্লেখ্য কবির প্রথম উপন্যাস 'আহত মুকুল' বেরিয়েছিলো ১৯৯৮ সালে। 'ডহর'-এর বেশ কিছু অংশ নিউইয়র্কে একটি সাপ্তাহিকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হচ্ছিলো, কিন্তু হঠাৎ কবিকে কিছু না-জানিয়ে মাঝপথে প্রকাশনা স্থগিত করে দেয়া হয়। নারী আন্দোলন ও নারীর অগ্রযাত্রা উপন্যাসটির উপজীব্য হওয়ায় এর প্রকাশ উক্ত পত্রিকা বন্ধ করে দেয় বলে কবির ধারণা। উপন্যাসটির পটভূমি নিউইয়র্কে বাঙালীদের বসবাস, নারী আন্দোলন ও গ্রীন হাউজ ইফেক্ট। প্রকাশ করছে হাতেখড়ি। তাছাড়া হাসানআল আব্দুল্লাহর অনুবাদে হুমায়ুন আজাদের 'শ্রেষ্ঠ কবিতা'র দ্বিভাষিক সংস্করণ প্রকাশ করছে বিভাস। গ্রন্থটির ইংরেজী নাম 'সিলেকটেড পোয়েমস'। সম্পাদনা করেছেন মার্কিন কবি স্ট্যানলি এইচ বারকান। এছাড়াও হাসানআল আব্দুল্লাহ সম্পাদিত বহুল প্রতিক্ষিত কবিতা সঙ্কলন ‘বিশশতকের বাংলা কবিতা’ এ বছর প্রকাশিত হচ্ছে মাওলা ব্রাদার্স থেকে।
--ভূঁইয়া আহসান হাবীব
|