|
বাংলা কবিতা
কালীকৃষ্ণ গুহ/Kalikrishna Guha
ভ্রমণ
তোমার লেখা শেষ হয়নি এখনো।
লেখা শেষ হলে হয়তো সম্পূর্ণ বধির হয়ে যাবে তুমি।
বধিরতা ঘিরে যতো কোলাহল
সবই আমাদের ভিতরে ফিরে আসবে একদিন।
এখন দূর-দূরান্তরের পাহাড় আর সমুদ্র
ঘিরে রেখেছে তোমাকে--
মেঘলা দিনের অচেনা আকাশ আর গাছপালা
তোমাকে ঘিরে রেখেছে।
এইসবের মাঝখান দিয়ে তুমি দীর্ঘ একটা ভ্রমণে বেরিয়েছ--
অস্পষ্ট রাস্তাঘাট ধরে
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ভিতর দিয়ে
এগিয়ে চলেছ তুমি
আর ফিরবে না . . .
রহমান হেনরী/Rahman Henry
পাথর প্রেমিক
মহিমান্বিত এক পাথরের গল্পে আমাদের বেলা কেটে গেলো;
একটা পাথরচুম্বনের ইচ্ছায় আমরা বেড়ে উঠছি--এশিয়ায়--
শিখছি দূর মরুভাষা; ভাবো তো, কীরকম পাথরপ্রেমিক!
ছায়া-টইটুম্বুর দিঘিজল, সাধুবৃক্ষ আর পাখিদের গ্রাম পিছু ফেলে
সাতসমুদ্র-তেরনদী পার হয়ে--আমরা সেখানে যাবো--
এই গল্পে কেটে যাচ্ছে--আমাদের রামাঞ্চিত সুরেলা শৈশব,
ঈদের ফিনফিনে শাদা পাঞ্জাবির মতো সভাঁজ-মার্জিত আমাদের
সাধিত যৌবন; মহিমান্বিত সেই পাথরের প্রেমে-অস্থির, ব্যাকুল!
আর দ্যাখো, চ্যানেল ঘুরাতেই--ন্যাশনাল জিওগ্রাফি--
দেখা যাচ্ছে--একটা কালো পাথর; সারিবদ্ধ আশেকান--তাকেই
ভিড় করে আছে তার চারপাশে;
ভাবো তো, কী প্রকার উপলগ্রাসী প্রেম!
নাজনীন সীমন/Naznin Seamon
বাধ্যগত কুকুরের মতো
বাধ্যগত কুকুরের মতো লেজ নাড়তে শিখেছি নির্ভূল।
কারণে অকারণে উচ্ছ্বাস এড়াতে, সাবলীলতা
ঝেড়ে ফেলে নিয়মানুবর্তিতার দৃঢ় জালে বাঁধা
থেকে তোতাপাখির শেখানো বুলি আওড়ানোর
মতো ইঞ্চি মেপে কথা বলতে অভ্যস্ত আমরা।
বর্ণবাদী সভ্যতার নিকষ চাবুক এখন লিঙ্গবাদী
সময়ের হাতে। অথচ এমনো হতে পারে
শুরু থেকে একক আধিপত্যের অহংকারী নিঃশ্বাসে
বিষাক্ত করেছে চারপাশ। মায়-মোগল-পাঠান
অ্যাজটেক মিশরীয়--উত্থান পাতন--শুরু এবং
শেষের খেলা। ঈসা, মুসা, যীশু, মোহম্মদ
রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যুধিষ্ঠির, রাবণ, সাদ্দাম
ব্লেয়ার, বুশ--ভাঙা আর গড়ার জ্বলন্ত
ইতিহাস। তথাপি নির্মম চাবুকখানা এখনো
তোমাদের পেশীবহুল হাতের সবাক সৌন্দর্য।
|