|

Contributors:
Poetry and Essays:
Anisur Rahman Apu
Ariful Islam
Basudhara Roy
Bill Wolak
Bishnupada Ray
BZ Niditch
Derek Walcott
Hassanal Abdullah
Jahanara Parveen
Jyotirmoy Datta
Louisa Calio
Maria Bennett
Masudol Hassan Rony
Michael Graves
Naoshi Koriyama
Naser Hossain
Naznin Seamon
Nicholas Birns
Octavio Paz
Pallav Bandyopadhayay
Sonali Begum
Stephanie McMillan
Swapan Majhi
Shabda News:
Bhuiyan Ahasan Habib
Letters to the Editor:
Azad Kashmir Zaman
Belal Beg
Bill Wolak
Leigh Harrison
Lidia Chiarelli
Louisa Calio
Michael Graves
mike graves
mike graves
Rudranath Banerjee
Saidur Rahman Milon
Tahmidul Islam
Zakir Sayed
Cover Art:
Mia Barkan Clarke
|
|
শব্দসংবাদ
মাসুদুল হাসান রনি
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ’র সাথে আড্ডা
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ, এক সময়ে তিনি দু'হাতে ছড়া লিখেছেন শিশু কিশোরদের জন্য। সেই সময়টা আশির দশকের শেষ এবং নব্বই দশকের শুরু। দৈনিক পত্রিকার শিশুকিশোরদের পাতায় নিয়মিতই তাঁর লেখা প্রকাশিত হত। তাঁর লেখার সাথে আমার পরিচয় ঘটে সম্ভবত ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে।
একসময় এই তরুন ছড়াকারের সাথে আমার পরিচয়ও ঘটে দৈনিক সংবাদের খেলাঘর পাতার আয়োজনে নিয়মিত সাহিত্য সভায়। গোটা নব্বই দশক জুড়ে আমরা ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম। তাই দেখা সাক্ষাত তেমন একটা আর হয়ে উঠেনি।
পরে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে দেশ ছেড়ে যান সুদূর আমেরিকায়। এই আমেরিকায় প্রবাস জীবনেও তাঁর লেখালেখি থেমে যায়নি। বরং গতি পেয়েছে বেশী। দুঃখের বিষয় হল তিনি শিশু কিশোরদের জন্য লেখা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন। মনোনিবেশ করেছেন কাব্যচর্চায়। বাংলা কবিতায় তিনি বেশ কিছু অসাধারণ কাজও করেছেন। মাইকেল মধুসূদনের পর বাংলা সাহিত্যে উদ্ভাবন করেছেন ‘স্বতন্ত্র সনেট’ ধারার। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই একটি কাজই তাঁকে বাংলা কাব্য জগতে দীর্ঘকালের স্থায়িত্ব এনে দেবে।
প্রবাসে নানান ব্যস্ততার মাঝেও তিনি দীর্ঘদিন যাবত সম্পাদনা করছেন বাই-লিংগুয়াল কবিতা পত্র "শব্দগুচ্ছ"। যা ইতোমধ্যে সিরিয়াস পাঠকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে। শুধু কি বাংলা ভাষা ভাষীদের মাঝে? তা কিন্তু নয়। এই "শব্দগুচ্ছ" আমেরিকা সহ আন্তর্জাতিক কবিমহলেও বেশ প্রশংসা পেয়ে আসছে।
আমাদের হাসান ভাই'র সাথে মাঝখানে আমার কোন যোগাযোগ ছিল না। মাঝে মাঝে তাঁর কবিতা পড়তাম। কিন্তু ২০০৮ সালে এক আড্ডায় হঠাৎ একদিন আমার সাংবাদিক বন্ধু দীপু শিকদার বলছিলেন, কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ বইমেলার জন্য দেশে এসেছেন।
শুনেই আমার মনে পড়ে যায় অনেক কথা। আগ্রহ নিয়ে তাকে জিগ্যেস করি, আপনি কি তাঁকে চেনেন?
দীপু ভাই কিছু বলেন না। শুধুই হাসেন।
আমি আবারো জিগ্যেস করি, আপনার কাছে তাঁর নাম্বার আছে?
দীপু ভাই কিছু না বলে তাঁর ফোন থেকেই হাসানভাইকে ফোন করে আমাকে ধরিয়ে দেন। আমি কথা বলি।
হাসান ভাই প্রথমে রনি বলায় চিনতে পারেননি। যখনি আমার পুরো নাম বলেছি তিনি সাথে সাথে চিনে ফেলেন। তারপর আমি এই কথা সেই কথা বলে পরের দিন দেখা করি বাংলা একাডেমির বহেরাতলার লিটিল ম্যাগ চত্বরে। বিদেশ থাকায় হাসান ভাই'র চুলে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। একমাথা ঝাঁকড়া চুল। ঠোঁটের কোনে লেগে আছে সেই চিরচেনা দিলখোলা প্রাণবন্ত হাসি।
তারপর থেকে প্রতি বছর নিয়মিত ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলায় হাসান ভাইর সাথে আমার দেখা হয়ে আসছে। আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়ে এখন অনেক বেশী জোরালো। অনেক বেশী যোগাযোগ হয় ফেসবুকের কল্যাণে।
হাসান ভাইর স্ত্রীও একজন স্বনামধন্য কবি, নাজনীন সীমন। তিনি অসাধারণ কিছু গল্প লিখেছেন, কবিতাতো বটেই। হাসান ভাইর কারণে তিনি আমার ভাবী। আবার বন্ধু দীপু ভাইর দিক দিয়ে তিনি আমার বড় আপা। আমার সুবিধা মতন আমি কখনো আপা, কখনো ভাবী ডাকি। আমার ডাবল দাবী, ডাবল আত্মীয়তা।
এইবার আমেরিকা যাব যখন ভাবছিলাম, তখন একদিন ফেসবুকে হাসান ভাইর কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়ে রাখি। আমেরিকা যাব আর হাসান ভাই, আপা-ভাবীর সাথে একবার দেখা করব না—এইটা কি করে হয়?
আমেরিকা যাবার পর নিজস্ব কিছু কাজ থাকায় যোগাযোগ একটু দেরি করে করি। এ নিয়েও হাসান ভাই মন খারাপ করেন।
তারপর একদিন হাসান ভাইকে বলি, কাল অবশ্যই আপনাদের বাসায় যেতে চাই।
পরের দিন হাসান ভাই শত ব্যস্ততার মাঝেও কুলিজ এভিনিউ থেকে আমাকে নিয়ে জ্যামাইকা ঘুরিয়ে দেখান। তারপর তাঁর উডহেভেনের বাসায় নিয়ে যান।
সেইদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাসান ভাইর বাড়িতে চমৎকার সময় কাটিয়েছিলাম। অনেক আড্ডা, অনেক কথা হয়েছিল আমাদের। সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি কিছুই বাদ যায়নি। আড্ডা দিতে দিতে রাত অনেক হয়ে যায়। কথা বলতে বলতে কত কিছু যে খেয়েছি তা আর এখন মনে নেই।
সব শেষে সীমন আপার হাতের রান্না করা চমৎকার সব খাবার খেয়ে আনন্দের ঢেঁকুর তুলে আমি ফিরে আসি কুলিজ এভিনিউর সুমনের বাসায়। অবশ্যই মাঝরাতে হাসান ভাইকে কষ্ট দিয়ে তাঁর গাড়িতে চড়ে।
অনেকদিন মনে থাকবে এই রাতটির কথা।
মার্কিন কবিতা সন্ধ্যায় কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ
ম্যানহাটনের মার্কিন কাব্যপ্রেমিদের প্রাণকেন্দ্র গ্রীনিজ ভিলেজে এক কবিতা সন্ধ্যায় ফিচার পোয়েট হিসেবে কবিতা পড়েন ভিন্ন ধারার সনেট নির্মাতা, বাংলা সাহিত্যের নব্বই দশকের অন্যতম প্রধান কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ। ১৯ অক্টোবর, রোববার, লোয়ার ম্যানহাটনের ‘লেফট ব্যাংক বুকস’ নামক ঐতিহ্যবাহি বইয়ের দোকানে আয়োজিত এ কবিতা সন্ধ্যায় কবি মাইকেল গ্রেভস-এর সঞ্চালনায় কবি ও প্রকাশক স্ট্যানলি এইচ বারকান ও সঞ্চালকের কবিতার পাশাপাশি পিন পতন নীরবতার মাঝে হাসানআল আব্দুল্লাহ’র কবিতা হয়ে ওঠে মুখর রাজনৈতিক ও মানবতার বিশুদ্ধ রূপ। তিনি যে ভাষা যে ভঙ্গি ও যে মানবিক মূল্যবোধকে তাঁর কবিতায় শিল্পীত ভাবে উপস্থাপন করেছেন তাকে এক কথায় অনন্য ও অসাধারণ না বলে উপায় নেই। তাঁর কবিতায় দেশ, মানুষ, সমাজ, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের এমন যুক্তিনিষ্ঠ উপস্থাপন তাঁর সময় কালে আর কেউ করে উঠতে পেরেছেন বলে জানা নেই। কবিতা লেখার পাশাপাশি হাসানআল আব্দুল্লাহ দ্বিভাষিক কবিতা পত্রিকা ‘শব্দগুচ্ছ’ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সম্পাদনা করে আসছেন, যা তাঁকে মার্কিন কবিদের মাঝে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে। তাঁর সাড়া জাগানো কাব্যগ্রন্থ ‘স্বতন্ত্র সনেট’ ও মহাকাব্য ‘নক্ষত্র ও মানুষের প্রচ্ছদ’ উত্তরাধুনিক কাব্য ধারায় অসামান্য দ্যোতনায় উদ্ভাসিত। কবিতা বোদ্ধারা এই কাব্যগ্রন্থ দুটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাঁর কাব্য ভাষায় অভিনবত্ব এবং উপস্থাপনার কৌশল অত্যন্ত চমৎকার যা মার্কিন তথা বিশ্বের অন্যান্য ভাষার কবিদের নজর কেড়েছে। এ কবিতা সন্ধ্যায় উন্মুক্ত পর্বে অন্যান্যদের মধ্যে কবিতা পড়েন রবার্ট স্কোটো, ফ্লোরেন্স কিন্ডেল, ও পিটার ব্লাক্সেল প্রমুখ। গান গেয়ে শোনান সানি বারকান।
ভূঁইয়া আহসান হাবীব
Find us on Facebook
|
|