|
Shabda News
|
|
Shabda News
জাহানারা পারভীনের হাতে তুলে দেয়া হলো শব্দগুচ্ছ পুরস্কার
শূন্যদশকের অন্যতম শক্তিশালী কবি জাহানারা পারভীনের হাতে শব্দগুচ্ছ পুরস্কার ২০১১ তুলে দিলেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। ২২ ফেব্রুয়ারী পাবলিক লাইব্রেরির দোতলার সেমিনার কক্ষে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম বেদু, আলম তালুকদার, কাজল চক্রবর্তী ও শব্দগুচ্ছ সম্পাদক হাসানআল আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মতিন রায়হান, সৌমিত্র দেব ও গান গেয়ে শোনান নিউইয়র্কের শিল্পী তাহমিনা শহীদ। নির্মলেন্দু গুণ তাঁর বক্তব্যে শব্দগুচ্ছ পুরস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পুরস্কার প্রাপ্ত কবিকে অভিনন্দন জানান। জাহানারা পারভীন প্রিয় কবির হাত থেকে পুরস্কার পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্ত কবির মা-বাবার উপস্থিতি একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে সক্ষম হয়। মাছরাঙা, বাংলাভিশন, এটিনবাংলা, চ্যানেল ওয়ান ও বৈশাখী টিভি সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি ধারণ করে। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে হাসানআল আব্দুল্লাহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
হাসানআল আব্দুল্লাহ'র ৪৫তম জন্মদিন উদযাপন
পহেলা বৈশাখ ১৪১৯ ছিলো কবি হাসানআল আব্দুল্লাহর ৪৫তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে কুইন্স-এ কবিগৃহে আয়োজিত হয় এক বিশেষ অনুষ্ঠান। স্থানীয় মার্কিন ও বাঙালী কবি-সাহিত্যিক ও হাসানআল আব্দুল্লাহর ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে বর্ষবরণ ও জন্মদিনের এ অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে কবিতা পড়ে শোনান বিশিষ্ট মার্কিন কবি ও প্রকাশক স্ট্যানলি এইচ বারকান, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের প্রফেসর ও কবি সুলতান ক্যাটো, ব্রঙ্কসে বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ আতাউর রহমান, কবি আনিসুর রহমান অপু ও কবি নাজনীন সীমন। সুবক্তগিন সাকি আবৃত্তি করেন ড. হুমায়ুন আজাদ ও হাসানআল আব্দুল্লাহর কবিতা। হাসানআল আব্দুল্লাহ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের কবিতা পড়ার পাশাপাশি ‘পহেলা বৈশাখ’ উপলক্ষে রচিত একটি গান গেয়ে শোনান। তাছাড়া আতাউর রহমান ও হাসানআল আব্দুল্লাহ উভয়েই বাংলা ক্যালেন্ডারের উৎপত্তির ইতিহাস তুলে ধরেন। অনুবাদ ও ভাষার সাযুজ্য নিয়েও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন উপস্থিত প্রায় সকলেই। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিবি বারকান ও লেসলি ক্যাটো। পরে নৈশ ভোজ ও কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
উল্লেখ্য হাসানআল আব্দুল্লাহ নব্বই দশকের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি দ্বিভাষিক কবিতা পত্রিকা শব্দগুচ্ছ সম্পাদনা করছেন ১৪ বছর ধরে। ১২খানা কাব্যগ্রন্থ সহ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ২৩। ইটালিয়ান ও ইংলিশ ধারার পর তিনি সনেটে নতুন ধারা প্রণয়ন ছাড়াও মানুষ ও মহাবিশ্ব নিয়ে মহাকাব্য "নক্ষত্র ও মানুষের প্রচ্ছদ"-এর রচয়িতা। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘নির্বাচিত কবিতা’। বাংলা থেকে ইংরেজী ও ইংরেজী থেকে বাংলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কবিতাও অনুবাদ করেছেন তিনি। তাঁর নিজের কবিতা অনূদিত হয়েছে ইংরেজী, ফরাসি, স্প্যানিশ ও কোরিয়ান ভাষায়।
গ্রীনিজ ভিলেজে বাংলা কবিতা
১১ মার্চ ২০১২ নিউইয়র্কের গ্রীনিজ ভিলেজের স্যালিস ক্যাফেতে ‘ফিনিক্স রিডিং সিরিজ’-এর উদ্যোগে এক কবিতা সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘ফিচার পেয়েট’ হিসেবে কবিতা পড়েন নব্বই দশকের অন্যতম প্রধান কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ। কবি মাইকেল গ্রেভসের পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে দশজন কবির প্রত্যেকে তিন মিনিট করে কবিতা পড়েন। তবে ফিচার পেয়েট হিসেবে হাসানআল আব্দুল্ল¬াহ ও লি ক্যাটনার উভয়েই তিরিশ মিনিট ধরে তাদের কবিতা উপস্থাপন করেন। গ্রেভস পরিচয় করিয়ে দেবার পর বিপুল করতালির ভেতর দিয়ে হাসানআল আব্দুল্লাহ প্রথমেই আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তার সদ্য প্রকাশিত কবিতার বই ‘ক্যাফের কবিতা’ সম্পর্কে বলেন “এই ধরনের ক্যাফে রেস্টুরেন্টে কবিতা পড়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে এই গ্রন্থ। তবে আমি এখানে মীথ ব্যবহারের চেষ্টা করেছি।” প্রথমেই তিনি “আমি খাবো” কবিতাটির ইংরেজী অনুবাদ পড়ে শোনান। এরপর তাঁর দ্বিভাষিক গ্রন্থ “ব্রেথ অব বেঙ্গল” থেকে পড়েন “উইথ এ লিটল ক্যাশ,” “গডস’ হোম,” ও “এভোলুশন”। “গডস’ হোম” কবিতার বাংলা “ঈশ্বরের রাজ্য”ও পড়ে শোনান। হাসানআল এ পর্যায়ে তাঁর প্রবর্তিত “স্বতন্ত্র সনেট”-এর নির্মাণ কৌশল তুলে ধরে ইংরেজী অনুবাদে একে একে সাতটি সনেট পড়েন। কবিতা পড়ার মাঝে মাঝে তিনি ফেব্রুয়ারীর বইমেলা ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, ও আন্তর্জাতিতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের কথা উল্লেখের ভেতর দিয়ে বাঙালী সংস্কৃতি ও কবিতার ঐতিহ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত কবি ও দর্শকরা পিনপতন নীরবতায় তাঁর কবিতা উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানটির ভিডিও ধারণ করেন নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্রী রবিন অলিভিয়া বারল্যান্ড, পরে তিনি হাসানআল আব্দুল্ল¬াহ ও লি ক্যাটনারের দীর্ঘ সাক্ষাতকার নেন। অনুষ্ঠান চলে বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।
ক্যাডম্যান প্লাজা রেস্টুরেন্টে কবিতা
ব্রুকলিনের ক্যাডম্যান প্লাজা রেস্টুরেন্টে ৩ মার্চ, ২০১২ শনিবার কবিতা পড়লেন কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ফিচার পোয়েট হিসেবে আরো কবিতা পড়েন সরা লিস্টকি। অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজীতে হাসানআল তার কবিতা উপস্থাপন করলেও ‘কিছু পয়সা হলে’ শিরোনামের কবিতাটি উভয় ভাষায় পড়ে শোনান। তাঁর গ্রন্থ ‘ব্রেথ অব বেঙ্গল’ ও প্রকাশিতব্য গ্রন্থ ‘আন্ডার দ্যা থিন লেয়ার অব লাইট’ থেকে বেশ কিছু অনুবাদ পড়েন তিনি। ঢাকায় সদ্য অনুষ্ঠিত বইমেলার কথা তুলে ধরার সাথে সাথে তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে উপস্থিত কবি সাহিত্যিকদের অবহিত করেন। অনুষ্ঠানে ওপেন মাইকে বেশ কয়েকজন কবি কবিতা পড়েন। অনুষ্ঠান চলে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। আয়োজক ছিলেন ব্রাউনস্টোন পোয়েটস এর পক্ষে পেট্রিসা ক্যারাগন।
বিংহামটনে অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন
২৪ মার্চ, ২০১২ শনিবার আটটি দেশের কবি-সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে নিউইয়র্ক সিটি থেকে দু’শ মাইল পশ্চিমে বিংহামটন শহরের 'দ্যা নো থিয়েটার'-এ হয়ে গেলে এক মনোজ্ঞ সাহিত্য সম্মেলন। আয়োজক বিংহামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রোগ্রাম ও ব্রুম কাউন্টি আর্ট কাউন্সিল। বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরান, নাইজেরিয়া, কিউবা, ইতালি, পেরু ও বুলগেরিয়ার কবি-সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান মঞ্চ হয়ে উঠেছিলো পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর সোচ্চার কণ্ঠ। মধ্যাহ্ন ভোজের পর ঘড়ির কাটার সাথে মিলিয়ে ঠিক দুপুর দু’টায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ব্রুম কাউন্টির আর্ট কাউন্সেলর মিস শ্যারন বেল। তিনি উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “দ্বিতীয় বারের মতো এমন একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন করতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত।” বক্তব্য রাখেন ‘প্যাটারসন লিটারারি রিভিউ’ সম্পাদক ও প্যাটারসন পোয়েট্রি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা কবি মারিয়া মাঝিওটি গিলেন। এরপর অনুষ্ঠানের মডারেটর স্যানতিনো ডিএঞ্জেলোর আমন্ত্রনে ইংরেজী নামের আদ্যাক্ষর অনুসারে একে একে মঞ্চে আসেন আমন্ত্রিত কবি-সাহিত্যকরা। প্রথমেই ডাক পড়ে ‘শব্দগুচ্ছ’ সম্পাদক কবি হাসানআল আব্দুল্লাহর। তিনি বলেন, “বিংহামটনের উপর দিয়ে বিশ বারের বেশী গাড়ি চালিয়ে গিয়েছি এবং প্রতিবারই ভেবেছি শহরটি দেখা দরকার। আজ যখন সেই সুযোগ হলো, ছুটে এসে খুঁজে পেলাম কবিতা।” তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে একে একে আটটি কবিতা পড়ে শোনান। প্রথম ও শেষ কবিতাটি অনুবাদের পাশাপাশি মূল বাংলা ভাষায়ও উপস্থাপন করেন। মঞ্চে আসেন স্ট্যানলি এইচ বারকান, সুলতান ক্যাটো, মাইকেল ফোলডেস, মাহমুদ কারিমি-হাক্কাক, মারিয়া মাজিওটি গিলেন, ইফানি এ ম্যানকিটি, ওসডেনি মরালাস, মারিও মোরিনি, ডিয়াগো ট্রেলেস পাজ, ভ্যানজিটি ভ্যাসিলেভ ও জো ওয়েল। মারিও মোরিনি তাঁর রচিত একটি নাটকের অংশ দুইজন সহযোগীকে নিয়ে অভিনয় করে দেখান। ভ্যানজিটি ভ্যাসিলেভ ও ডিয়াগো পাজ প্রবন্ধ পড়ে শোনান। মাহমুদ কারিমি-হাক্কাক মার্কিন দেশকে ইরানে বোমা হামলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। কবি ও ফিল্ম মেকার হাক্কাক ১৯৯৯ সালে দেশ থেকে বহিষ্কৃত হন তাঁর ছবির মাধ্যমে ‘সমাজকে কলুষিত’ করার দায়ে। কবি ও প্রকাশক স্ট্যানলি বারকান, মারিয়া মাজিওটি গিলেন ও প্রফেসর জো ওয়েল-এর কবিতা অনুষ্ঠানে আলাদা স্বাদ এনে দেয়। অনুষ্ঠান শেষ হয় কবি স্ট্যানলি কিউনিটজের কবিতা ‘দ্যা লেয়ারস’ বিভিন্ন ভাষায় পড়ার মধ্য দিয়ে। ক্রসকালচারাল কমিউনিকেশন্স-এর উদ্যোগে কবিতাটি এ পর্যন্ত ৫৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নৈশ ভোজের আসর বসে স্থানীয় গ্রাণ্ড রয়েলস হোটেলে। রাত এগারোটা পর্যন্ত চলে কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডা ও ভোজন পর্ব। ভোজন শেষে অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রফেসর মারিও মারিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। ‘ক্রসরোড’ নামের পোস্টার ও দৃষ্টি নন্দন স্যুভিনিরে কবি-সাহিত্যিকদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও প্রতিনিধিত্বশীল রচনা প্রকাশের মাধ্যমে বৃহত্তর পাঠকের হাতে তুলে ধরার ব্যবস্থাও সকলের প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়।
─ভূঁইয়া আহসান হাবীব, সম্পাদক আধুনিক>
|
|