|
Contributors:
Poetry and Essays:
Hassanal Abdullah
Roni Adhikari
Kayes Ahmed
Rassel Ahmed
Chak Amitava
Pallav Bandyopadhayay
Stanley H. Barkan
Nicholas Birns
Jyotirmoy Datta
Jyotiprakash Dutta
Caroline Gill
Nirmolendu Goon
Clinton Van Inman
John McLeod
Manas Paul
Matin Raihan
Hasan Sabbir
Naznin Seamon
Amiyakumar Sengupta
Letters to the Editor:
Maria Bennett
Laura Boss
Stephen Cipot
Joan Digby
John Digby
Arthur Dobrin
Kristine Doll
Maria Mazziotti Gillan
Adel Gogy
Mary Gogy
Mike Graves
Leigh Harrison
Yvette Neisser Moreno
Marsha Solomon
Tino Villanueva
Bill Wolak
Letters to the Editor:
Babette Albin
Chandan Anwar
Mansur Aziz
Laura Boss
Rumana Gani
David Gershator
Caroline Gill
Isaac Goldemberg
Zahirul Hasan
Omar Faruque Jibon
Gholam Moyenuddin
Hasan Sabbir
Subir Sarkar
Tabrish Sarker
Bikul Hossain Rojario
Cover Art:
Ekok Soubir
মানুষ, সমাজ-সংসার, স্বপ্ন, প্রেম-প্রকৃতি, নারী, নিসর্গ, বিচিত্র নিবিড় ভালোবাসা তাঁর কবিতায় প্রশ্রয় পায়। নব্বই দশকে যে স্বল্পসংখ্যক কবি কাব্যচর্চায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন হাসানআল আব্দুল্লাহ তাঁদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। কবি জীবনের তাৎপর্যকে সামগ্রিকভাবে অনুধাবন করেছেন তিনি। মূলত এ কারণেই নিরহংকার এক মহৎ জীবন তাঁর কাম্য প্রতিনিয়ত। এমন জীবন বিকশিত হতে পারে শুধু বৈষম্যমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও পরাধীনতামুক্ত একটি সমাজেই।
—রনি অধিকারী
|
|
Shabdaguchha: The 15th Anniversary Issue
রনি অধিকারী
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ: কবিতায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ। উত্তরাধুনিক শক্তিমান এক অগ্রসর কবির নাম। প্রচারের ডামাডোলের বাইরে বিদেশ বিভুঁই-এ নিভৃতচারী আছেন এই মেধাবী কবি। স্বভাবে প্রচার বিমুখ এবং খ্যাতির প্রলোভন মুক্ত। উদার মানবতাবাদী, কাল ও সমাজ সচেতন, প্রগতিপন্থী এই কবির কাব্য-যাত্রা নব্বই দশকে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ২৪। ‘শব্দগুচ্ছ’ নামে একটি ছোটোকাগজও সম্পাদনা করেন।
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ নতুনত্বের সন্ধানী, এবং তাঁর নিরন্তর পরিবর্তনশীলতার দৃষ্টান্ত কবিতায় প্রতিফলিত:
পায়ে পায়ে হেঁটে এসে কুয়াশার কুটিল সভ্যতা
বিস্তর বাহাস করে কাঁটাতারে ঘিরে দেয় সাধ
ধারালো ছুরির আঁচে রোদ কেটে করে ফালাফালা
অবসন্ন মহাকাশে আরো এক নক্ষত্র পতন...
[সময়ের তাড়া খেয়ে, পৃ: ৩১]
কবিতা বা সাহিত্যচর্চাকে কোনো নির্দিষ্ট ছকে বা ছাঁচে ফেলা বড়ো দুরূহ হয়ে পড়ে। মানুষ যা অনুভব করে—একান্তে, মনের গহীনে যে-সব ভাবনার তোলপাড়, সেগুলোকে বিশেষ ভাষাভঙ্গিতে উজাড় করে জানাতে চায়। ব্যক্তি বিশেষে এই প্রকাশ ভঙ্গি হয় ভিন্ন। একদম অন্যরকম।
শব্দ নেই শূন্যতায় একটা শুধু চাকা
সেখান থেকে বাড়ছে স্মৃতি সান্ত্বনার ছাপ,
মানুষ নেই মানুষ কই মাঠখানা যে ফাঁকা;
সূর্য আছে এবং তার হালকা অনুতাপ।
[আমরা তিনজন, পৃ: ১৫]
তবে একই উপলব্ধি বা বিশ্বাস, উপলব্ধিগত বোধ প্রকাশ-সমৃদ্ধ সমিল সাহিত্য-পরিমণ্ডলও পরিলক্ষিত হতে পারে। তেমনি একটি সাহিত্য-তত্ত্বের নাম পোস্টমর্ডানিজম বা উত্তরাধুনিকতা।
পায়ের কনিষ্ঠ নখ থেকে মাথার উড়ন্ত চুল
কাল রাতে ওর সমস্তটা ছিলো
শুধু আমার দখলে
যেনো আমি বাইশের এক টগবগে নির্ভুল সাহস
আর সে-ও ছিলো আঠারোর ফুটন্ত কুমারী
দ্রবীভূত হয়ে যাই
আমি তাই
পুরোপুরি তার আদ্যন্ত মুকুরে।
[ছায়াপথে উদ্বেগ, পৃ: ৭]
কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ কবিতাকে স্থাপন করেছেন অস্তিত্বের মর্মমূলে। শিল্প চেতনায় তাঁর কেন্দ্রীয় শক্তির উৎস মানব অস্তিত্ব বিষয়ক ভাবনায়। কবিতাকে তিনি জীবনের সংরাগ আর অভীপ্সার আগ্নেয় উদ্ভাসন বলেই বিবেচনা করেছেন। তাঁর কবিতায় এই প্রাজ্ঞ চিন্তার প্রকাশ ঘটেছে সর্বত্র।
গীর্জার ঘণ্টারা আর মসজিদের আজান
দিকে দিকে ভয়ঙ্কর
আপোষের একসাথে খুলে দেয় দ্বার।
অসংলগ্ন আর্তির অতীতে
পড়ে থাকে ভাঙাচোরা মানুষের হাড়;
নিরঙ্কুশ যৌন পীড়নের দায়ে ফাঁসি হয় স্বতস্ফূর্ত কবিতার।
[শব্দ মৈথুনের কাল, পৃ: ২০]
বিষয়াংশ, ভাব-পরিমণ্ডল এবং প্রকরণ-প্রকৌশলের বিবেচনায় হাসানআল আব্দুল্লাহ’র কবিতা বাংলা সাহিত্যধারায় নিঃসন্দেহে স্বাতন্ত্র্যের পরিচয়বাহী। সময় ও সমাজের দ্বান্দ্বিক বিকাশ, কবি-আত্মার গোপন বাসনা এবং মানব অস্তিত্বের অভিলাষকে কবিতায় শিল্পিত করাই এই কবির নিগূঢ়তম সাধনা।
বাস্তব জীবনের সংকট-সমস্যা, সংঘাত-সংগ্রাম, ক্লান্তি, গ্লানি-ঘৃণা, দহন-পীড়নের পোড়-খাওয়া অভিজ্ঞতা তাঁর কবিতার একান্ত প্রগাঢ় উপাদান। এটি মূলত উত্তরাধুনিক কবিতার একটি প্রধান লক্ষণও বটে। কবি যাপিত জীবনের প্রতিকূলতার সঙ্গে কখনো আপোস করেননি। তাই বলা যায়, প্রতিভাবান মেধাবি এক কবি জীবন ঘষে শিল্পের আগুন জ্বালিয়েছেন।
যেভাবে খানখান;
ভাঙবে মাঠঘাট, ভাঙবে জনসভা
ভাঙবে আলগোছে হাজারো ভেবে রাখা স্বপ্ন সম্ভার;
বিপুল ঝড় এলে যেমন ভেঙে যায় সুখের ঘরবাড়ি।
দিবস ভেঙে গেলে দিনও ভেঙে যায়—
সন্ধ্যা ভেঙে গেলে রাতও ভেঙে যায়
খুঁটিরা ভেঙে গেলে যেমন ঘরখানা।
[সন্ধ্যা সমাচার, পৃ: ৮]
মানুষ, সমাজ-সংসার, স্বপ্ন, প্রেম-প্রকৃতি, নারী, নিসর্গ, বিচিত্র নিবিড় ভালোবাসা তাঁর কবিতায় প্রশ্রয় পায়। নব্বই দশকে যে স্বল্পসংখ্যক কবি কাব্যচর্চায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন হাসানআল আব্দুল্লাহ তাঁদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। কবি জীবনের তাৎপর্যকে সামগ্রিকভাবে অনুধাবন করেছেন তিনি। মূলত এ কারণেই নিরহংকার এক মহৎ জীবন তাঁর কাম্য প্রতিনিয়ত। এমন জীবন বিকশিত হতে পারে শুধু বৈষম্যমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও পরাধীনতামুক্ত একটি সমাজেই। অতএব, কবি মনে করেন, এরূপ একটি সমাজই আমাদের কাক্সিক্ষত ও প্রত্যাশিত।
হাসানআল আব্দুল্লাহ, শীত শুকানো রোদ, প্রকাশক: অনন্যা, প্রচ্ছদ: মোমিনউদ্দীন খালেদ, প্রকাশকাল: ফেব্র“য়ারি ২০১৩, পৃষ্ঠা: ৯৬, মূল্য: ১৫০ টাকা
|
|